বাইনান্স হলো একটি বিটকয়েন এক্সচেঞ্জ প্ল্যাটফর্ম যা ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং এবং বিনিয়োগের সুযোগ প্রদান করে। এটি ২০১৭ সালে চাংচিয়ে তৈরি হয়েছে এবং প্রথমে চাইনা থেকে আর্থিক সাহায্যে শুরু হয়েছিল। বাইনান্স প্রথমে বিটকয়েন ও আলটকয়েন সহ কিছু প্রধান ক্রিপ্টোকারেন্সির বিনিয়োগ পরিষেবা প্রদান করত। সময়ের সাথে বাইনান্স আরও বেশি ক্রিপ্টোকারেন্সি উপলব্ধ করার জন্য তাদের প্ল্যাটফর্মটি প্রসারিত করেছে।
বাইনান্সে ব্যবহারকারীরা ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলি ক্রয় ও বিক্রয় করতে পারেন এবং ট্রেড করতে পারেন আরও নির্দিষ্ট ব্যবসায়িক পদ্ধতিতে। বাইনান্সে বিভিন্ন ক্রিপ্টোকারেন্সির জন্য মার্কেট অর্ডার, লিমিট অর্ডার, স্টপ লস অর্ডার এবং টেকনিক্যাল চার্ট এনালাইসিস সহ প্রয়োজনীয় প্রয়োগ করা যায়।
বাইনান্স একাউন্ট কি
বাইনান্স একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ প্ল্যাটফর্ম যা বিভিন্ন ক্রিপ্টোকারেন্সি টোকেন এবং ডিজিটাল এসেটসমূহ বিনিময় ও ট্রেড করার সুযোগ প্রদান করে। বাইনান্স একাউন্ট একটি ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট হিসেবে কাজ করে, যা একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং ডিজিটাল এসেট ট্রেড করতে পারে এবং বাইনান্স প্ল্যাটফর্মে অন্য ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যালেন্স রাখতে পারে। বাইনান্স একাউন্ট তৈরি করার পরে ব্যবহারকারীরা ডিপোজিট করতে পারেন, উত্তোলন করতে পারেন, বিভিন্ন ক্রিপ্টোকারেন্সি পেমেন্ট করতে পারেন এবং ট্রেড করতে পারেন। একাউন্ট হোল্ডারদের ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যালেন্স, হিস্টোরি এবং অন্যান্য বিনিময় তথ্য বাইনান্স একাউন্টের মাধ্যমে অ্যাক্সেস করা যায়।
বাইনান্স একাউন্ট করার নিয়ম
বাইনান্স একাউন্ট খোলা খুবই সহজ এবং পাঠকের বিভিন্ন ধরনের তথ্য সরবরাহ করা প্রয়োজন হয়। নিম্নোক্ত ধাপগুলো মেনে চললে আপনি বাইনান্সে একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন:
ধাপ ১: ওয়েবসাইটে যান প্রথমে বাইনান্সের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান। আপনি ইন্টারনেট ব্রাউজারে বাইনান্স অফিসিয়াল ওয়েবসাইটটি সার্চ করে খুলতে পারেন।
ধাপ ২: সাইন আপ করুন ওয়েবসাইটে পৌঁছার পরে, "সাইন আপ" (Sign Up) বা "রেজিস্টার" (Register) বোতামটি চাপুন।
ধাপ ৩: একাউন্ট তৈরি করুন আপনার ইমেল ঠিকানা দিয়ে একটি নতুন ব্যবহারকারী আইডি (User ID) এবং পাসওয়ার্ড নির্বাচন করুন। নিশ্চিত হওয়ার পরে এগিয়ে যান।
ধাপ ৪: পরিচিতিমূলক তথ্য সরবরাহ করুন বাইনান্স একাউন্ট তৈরি করতে আপনার নাম, ধরণ (ব্যক্তি বা কোম্পানি), দেশ, মোবাইল নম্বর ইত্যাদি প্রয়োজন হবে। সম্পূর্ণ করুন এবং "নতুন অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন" বোতামটি চাপুন।
ধাপ ৫: ইমেল যাচাই করুন আপনার নির্বাচিত ইমেল ঠিকানায় একটি যাচাইকরণ লিঙ্ক পাঠানো হবে। আপনার ইমেল ইনবক্স পরীক্ষা করুন এবং একটি লিঙ্কে ক্লিক করুন যাতে আপনার ইমেল যাচাই হয়ে যায়।
ধাপ ৬: ২এফএ সেটআপ করুন (ঐচ্ছিক) বাইনান্স একাউন্ট নিরাপত্তা বাড়াতে, আপনি দুটি পরিচালিত ফ্যাক্টর (2FA) সেটআপ করতে পারেন। এটি ঐচ্ছিক, তবে সুরক্ষা প্রায়শই বাড়াবে।
ধাপ ৭: একাউন্ট ব্যবহার করুন ইমেল যাচাই হওয়ার পরে আপনি আপনার নতুন বাইনান্স একাউন্ট ব্যবহার করতে শুরু করতে পারেন। আপনি ট্রেড করতে পারবেন, বাইনান্স ওয়ালেট ব্যবহার করতে পারবেন এবং আরও অনেক কিছু করতে পারবেন।
বাইনান্স থেকে আয় করার উপায়
বাইন্যান্স হলো একটি প্রসিদ্ধ ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ, যেখানে আপনি বিভিন্ন ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনা-বেচা করতে পারেন। বাইন্যান্স থেকে আয় করার উপায়গুলো নিম্নরূপ:
ট্রেডিং: আপনি বাইন্যান্সে বিভিন্ন ক্রিপ্টোকারেন্সির সাথে ট্রেড করতে পারেন। আপনি ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনার সময় নিশ্চিত মূল্য পর্যবেক্ষণ করবেন এবং ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল্য বাড়তে গেলে বিক্রি করে লাভ করতে পারেন। ট্রেডিং ব্যবসায়ে প্রফিট করার জন্য আপনাকে মার্কেট পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল্য পরিবর্তন এবং ট্রেন্ড সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হবে।
লেনডিং: বাইন্যান্সে আপনি আপনার ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনড করে অন্যেরা ট্রেড করার জন্য মূল্যবান হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন। এই পদ্ধতির মাধ্যমে আপনি সাধারণত একটি স্থির আয় পাবেন যেটি নির্ভরযোগ্য সম্পদ হিসাবে গণ্য হয়।
ডিভিডেন্ড পেয়ে ট্রেডিং: কিছু ক্রিপ্টোকারেন্সি প্রতিটির জন্য বাইন্যান্স ডিভিডেন্ড প্রদান করে। আপনি আপনার ক্রিপ্টোকারেন্সি বাইন্স টোকেন (BNB) এ পরিবর্তন করে আপনার ট্রেড করার উপযোগীতা বাড়িয়ে দিতে পারেন এবং আপনি ডিভিডেন্ড পাবেন যা আপনি বিক্রি করতে পারেন বা আরও ট্রেডিং করতে পারেন।
আইসিও এবং আরও অনেক কিছু: বাইন্যান্সে আপনি নতুন ক্রিপ্টোকারেন্সির আইসিও (Initial Coin Offering) এ অংশগ্রহণ করতে পারেন এবং আরও অনেক কিছু। আপনি নিজের পছন্দ মতো ব্যবসায়িক পদ্ধতি চয়ন করতে পারেন যা আপনার আয় বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
প্রতিটি পদ্ধতিতেই ক্ষমতা এবং পূর্ণতা পর্যাপ্ত জ্ঞান এবং ব্যবসায়িক বুদ্ধিমত্তা প্রয়োজন। সারাদিন ট্রেডিং করার আগে বাইন্যান্সের ব্যবহার নিয়ে ভালো পরিচিতি পাওয়া উচিত, যা আপনাকে স্থিতিশীল বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে সাহায্য করবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিয়োগের জন্য স্বল্প খরচ নিশ্চিত করার জন্য উপযুক্ত পর্যবেক্ষণ এবং প্রতিস্থান গবেষণা করা।
Binance থেকে বিকাশে টাকা ট্রান্সফার
বিকাশে টাকা ট্রান্সফার করতে আপনার প্রথমে একটি বিকাশ অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। বিকাশ অ্যাকাউন্ট করতে আপনি আপনার মোবাইল নম্বর দিয়ে একটি বিকাশ সিম নিয়ে আপনার নিকটস্থ একটি বিকাশ কেন্দ্রে গিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন।
একবার আপনি বিকাশ অ্যাকাউন্ট তৈরি করলে, আপনাকে আপনার বিনান্স একাউন্টে লগ ইন করতে হবে। তারপরে নিচের পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করুন:
- Binance একাউন্টে লগ ইন করুন।
- আপনার মার্কেটপ্লেসে যান এবং "পেশাগত পছন্দ" অংশে যান।
- "জমা করুন" বা "ট্রান্সফার" বাটন চয়ন করুন।
- একটি বিকাশ অ্যাকাউন্ট চয়ন করুন যেটি আপনি টাকা পাঠাতে চান।
- আপনার প্রদত্ত বিকাশ অ্যাকাউন্টের প্রাথমিক তথ্য প্রদান করুন।
- পরিমাণ সিলেক্ট করুন যা আপনি বিকাশে পাঠাতে চান।
- ট্রান্সফার করার আগে আপনার সমস্ত বিনান্স ট্রান্সফার ফি পরিশোধ করতে হবে।
- সম্পূর্ণ তথ্য পর্যালোচনা করে নিশ্চিত হলে, "সাবমিট" বা "ট্রান্সফার" বাটনে ক্লিক করুন।
- আপনার বিকাশ একাউন্টে টাকা পাঠানো হয়ে গেলে, আপনি একটি ট্রান্সফার সম্পন্ন মেসেজ পেয়ে থাকবেন।
এই ধাপগুলি অনুসরণ করে আপনি Binance থেকে আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করতে পারবেন। যদি কোনো সমস্যা অথবা প্রশ্ন থাকে, আপনি Binance এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন বা বিকাশের সমর্থন দলের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
কিভাবে বিটকয়েন ট্রেড করা যায়
বিটকয়েন ট্রেড করার জন্য আপনার কিছু পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। নীচের ধাপগুলি অনুসরণ করে আপনি বিটকয়েন ট্রেড করতে পারেন:
১. ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ সংগ্রহ করুন: প্রথমে আপনার জন্য একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ সিলেক্ট করুন। এক্সচেঞ্জ হলো একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে আপনি বিটকয়েন কিনতে পারেন এবং বিক্রয় করতে পারেন। কিছু প্রমুখ এক্সচেঞ্জ যেমন Binance, Coinbase, Kraken, এবং Bitstamp ইত্যাদি। প্রতিটি এক্সচেঞ্জ তাদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া এবং ট্রেডিং শর্তাদি দিয়ে থাকে। আপনার জন্য উপযুক্ত একটি সিলেক্ট করুন এবং নিবন্ধন প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করুন।
২. একাউন্ট তৈরি করুন: নিবন্ধন সম্পূর্ণ হলে, এক্সচেঞ্জে একটি একাউন্ট তৈরি করুন। আপনাকে সাধারণত নাম, ঠিকানা, ইমেল এবং পাসওয়ার্ড দিতে হবে। নিবন্ধনের পরে, আপনাকে একটি ইমেল দ্বারা একটি নিশ্চিতকরণ লিঙ্ক পেয়ে যাবেন। লিঙ্কে ক্লিক করে নিশ্চিতকরণ সম্পন্ন করুন।
৩. অ্যাডফান্ড করুন: অ্যাকাউন্ট তৈরি হলে, আপনি আপনার একাউন্টে অ্যাডফান্ড করতে পারেন। আপনি অ্যাচ বা ব্যাংক স্থানান্তর দিয়ে অ্যাডফান্ড করতে পারেন। আপনার একাউন্টে টাকা জমা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট এক্সচেঞ্জ একাউন্টের অপশনগুলি ব্যবহার করুন।
৪. ট্রেডিং প্ল্যান তৈরি করুন: বিটকয়েন ট্রেড করার আগে আপনাকে একটি ট্রেডিং প্ল্যান তৈরি করতে হবে। এটি আপনার প্রতিষ্ঠানগুলি, লক্ষ্যগুলি, ট্রেডিং বাজারের পরিসংখ্যান এবং প্রবণতা অনুযায়ী হতে পারে। এটি আপনাকে ট্রেড এন্ট্রি পয়েন্ট, প্রতিষ্ঠানের উপর স্টপ লস এবং গোল স্ট্যাটিস্টিক্স স্থাপন করতে সাহায্য করবে।
৫. বিটকয়েন ট্রেড করুন: এখন আপনি বিটকয়েন ট্রেড করতে পারেন। আপনি ট্রেডিং ড্যাশবোর্ডে প্রবেশ করে বিভিন্ন ট্রেডিং অপশন পাবেন। আপনি কেনা এবং বিক্রয় অর্ডার স্থাপন করতে পারেন এবং মার্কেট মূল্য বা সীমা আদান প্রদান করে ট্রেড করতে পারেন।
৬. নিরাপত্তা বজায় রাখুন: বিটকয়েন ট্রেডিং এক্সপেরিয়েন্স প্রাপ্তির জন্য নিরাপত্তা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ। সর্বদা সতর্ক থাকুন এবং কাউন্টারপার্টিকে চেক করার আগে যত্ন নিন। সময়ের সাথে ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিময় মার্কেট পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়, তাই এটি কর্তৃপক্ষের ওপর নির্ভরযোগ্যতার একটি নিরীক্ষণ রাখুন। আরও পড়ুনঃ আমাজন এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো?
সাবেক যাবতীয়, দক্ষ ট্রেডার হওয়ার জন্য বিশেষ করে শিক্ষাগত সম্পদ এবং মার্কেট পর্যবেক্ষণের সাথে পরিচিত হতে থাকুন। সেইসাথে, ট্রেডিং রিস্ক ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পরিষ্কার ধারণা রাখতে হবে এবং হ্যাকসওয়ার বা প্রাকৃতিক সংকটের প্রতি সতর্ক থাকতে হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন